সিলেট: দক্ষিণ সুরমায় পিতার মাদক ব্যবসার অতিষ্ঠ হয়ে শিশু পুত্রের আত্মহত্যার বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সাবেক ছাত্রদল নেতা ও রেমিটেন্সযুদ্ধা তারেক মাহমুদকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় স্থানীয় জনসাধারণের মাধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র জানায়, বলদী এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যাসায়ী শেখ এনাম দীর্ঘদিন থেকে এই এলাকাকে মাদকের হাটে পরিনত হয়েছিল। এটি নিয়ে বিভন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় বলদি একতা যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাদক সিন্ডিকেটকে প্রতিহত করেন এলাকাবাসী। এতে মানষিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে মাদককারবারী এনামের শিশুপুত্র ফরহাদ (১১)। একপর্যায়ে গত ২৪ অক্টোবর ২০২৪ সে বিষপানে আত্মহত্যা করে।
এঘটনার পর দিন ২৫ অক্টোবর দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সাবেক ছাত্রদল নেতা ও রেমিটেন্সযুদ্ধা তারেক মাহমুদকে প্রধান আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের মা পারভিন বেগম। মামলাটি কোন প্রকার তদন্ত ছাড়াই প্রবাসে থাকা ব্যাক্তিকেও অভিযুক্ত করে গত ২৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহন রায় আদালতে চার্জশীট দিয়েছেন। এর পর চার্জশীটটি গ্রহন করে গতকাল বৃহষ্পতিবার আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির পর প্রবাসী তারেক মামহমুদের বাড়িঘর ভাংচুর করেছে মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রবাসী তারেক মাহমুদ ঘটনার দিন বিদেশে অবস্থান করছিলেন। তার বিরুদ্ধে কোনো প্রত্যক্ষ প্রমাণ না থাকলেও তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রবাসীর পরিবারের ভাষ্যমতে, আমাদের আত্মীয় দেশের বাইরে থাকায় অনেকের হিংসার শিকার। পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই তাকে ফাঁসানো হচ্ছে। তারেক মাহমুদ বলদি একতা যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি এলাকাকে মাদক মুক্ত করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেখ এনাম ছিলেন বলদী এলাকার মাদক ব্যবসায়ী। তিনি যুব সমাজকে ধ্বংসের মূল হুতা। তারেক মাহমুদ মাদক বিরুধী আন্দোলন চালিয়েছিলেন। শেখ এনাম এর জন্য ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। শেখ এনাম মাদক সেবনকালে বলদি একতা যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির সবাইকে নিয়ে হাতে নাতে ধরেছিলেন। শেখ এনামের ছেলে ফাহাদ বাবার অপমান সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করে। কিন্তু এই আত্মহত্যাকে সাজিয়ে তারেক মাহমুদকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। এখন আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
ভুক্তভোগী তারেক মাহমুদ বলেন, আমি দীর্ঘ দিন থেকে দেশে নেই। দেশে থাকাকালে এলাকাকে মাদকমুক্ত করতে সংগ্রাম করেছি। স্থানীয় জনসাধারণকে সাথে নিয়ে এলাকা থেকে মাদকের আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একটি মহল আমাকে হত্যামালার আসামী করেছে।
দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি কামরুল হাসান তালুকদার বলেন, মামলাটি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা দীর্ঘ তদন্ত শেষে চার্জশিট প্রদান করেছেন। তদন্তের বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন। ঘটনার সময় তারেক মাহমুদ প্রবাসে থাকলে আসামী হওয়ার কথা নয়। নিরপরাধ কেউ চার্জশীটভুক্ত হলে আদালত সেটি বিবেচনা করবে। আমরা ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।